দিনাজপুরের পুনর্ভবা নদীর ওপর নির্মিত গৌরিপুর সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো স্লুইসগেট প্রকল্পে বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা। চলতি মৌসুমে এর মাধ্যমে পানির স্তর চার মিটার বাড়ছে। এতে ৩,৬০০ হেক্টর জমি চাষের আওতায় আসবে এবং অতিরিক্ত সাত হাজার মেট্রিকটন ফসল উৎপাদনের আশা সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এ প্রকল্পে চার ভেল্ট রেগুলেটর বা ছয় থেকে সাড়ে ছয় মিটারের স্লুইসগেট। এর ৯২ মিটার ইউয়্যার ও ৫০০ মিটার স্লুইসগেট সংযোগ সড়ক রয়েছে। প্রকল্পটি উদ্বোধনের পর এরই মধ্যে দিনাজপুর সদর ও বিরল উপজেলায় এক হাজার ৬০০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এসেছে।
এতে চলতি মৌসুম থেকে ৩,৬০০ হেক্টর জমি চাষের আওতায় আসবে। এছাড়া ভূগর্ভস্থ পানির স্তরে উচ্চতা বাড়ার মাধ্যমে প্রকল্পসংলগ্ন হাজার হাজার পরিবারের সুপেয় পানি সংকট দূর হয়েছে। সুফল পাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা; সে সঙ্গে দুই উপজেলার আর্থ-সামাজিকসহ যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন হয়েছে।
হরিপুর স্বনির্ভর সেচ কমিটির সভাপতি মোস্তাকিম বাবুল বলেন, শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে এ অঞ্চলের জমিগুলোতে তেমন চাষাবাদ হতো না। সেচের অভাবে অধিকাংশ জমি আগে পতিত-অনাবাদি থাকতো। আশপাশের গ্রামগুলোতে নলকূপেও খাবার পানি পাওয়া যেত না। এখন গৌরীপুর সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের পানি দিয়ে জমি আবাদ করে ফিরছে এলাকার মানুষের ভাগ্য। খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছে খাবার পানিও।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম জানান, চলতি শুষ্ক মৌসুমে এক হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এলএলপি নির্মাণের মাধ্যমে আগামীতে ৩,৬০০ হেক্টর জমি সেচ সুবিধা পাবে।
সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, সেচের অভাবে এখানে আবাদ করা দুরূহ ছিল। তবে স্লুইস গেটের কারণে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনসহ অতিরিক্ত সাত হাজার মেট্রিকটন ফসল উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৬২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। স্লুইসগেট প্রকল্পের আওতায় সদর ও বিরল উপজেলার ৩৫টি গ্রামে তিন হাজার ৬০০ হেক্টর জমি চাষের আওতায় আনা হয়েছে।