রাজশাহীতে চলছে শেষ মুহূর্তের হিসাব-নিকাশ

রাত পোহালেই রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হবে। সোমবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে প্রচারকাজ। আগামী বুধবার অনুষ্ঠেয় নির্বাচন নিয়ে শেষ মুহূর্তে প্রার্থীরা ভোটের হিসাব-নিকাশ কষতে শুরু করেছেন। ২ জুন প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই ব্যাপক প্রচারকাজ শুরু করেন সদ্য সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তবে বাকি তিন প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের হাফেজ মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী (হাতপাখা), জাতীয় পার্টির মো. সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল) এবং জাকের পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট লতিফ আনোয়ারকে (গোলাপ ফুল) প্রচারে তেমন একটা দেখা যায়নি। এরই মধ্যে গত ১২ জুন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচন বর্জন করে। ফলে মেয়র পদের ভোট নিয়ে নগরবাসীর তেমন আগ্রহ নেই। তবে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১২ জন ও সংরক্ষিত নারী আসনে ৪৬ জন প্রার্থী নগরজুড়ে প্রচার জমিয়ে তোলেন। গত সোমবার রাত ১২টায় প্রচারকাজ শেষ হয়েছে। রাসিকের ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডের ১৯টিতে কাউন্সিলর পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই পরস্পরের মুখোমুখি। এসব ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও দলীয় সিদ্ধান্ত ভেঙে তাদের ১৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। আবার জামায়াত, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ অন্যান্য দলের নেতারাও কাউন্সিলর নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। সাধারণ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ১১২ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৩৮ জনের নামে একটি থেকে সর্বোচ্চ ২৩টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। অনেকেই হত্যা, অস্ত্র, মাদকদ্রব্য, চোরাচালান এবং নাশকতা মামলার আসামি। ভোটকে কেন্দ্র করে এসব মামলার আসামি কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকরা সহিংস হয়ে উঠেছেন। ফলে প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই এসব প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা বিরোধে লিপ্ত হচ্ছেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষ, ছুরিকাঘাত, ককটেল হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শুরু থেকেই উত্তপ্ত রয়েছে নির্বাচনী মাঠ। অন্যদিকে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাঝে চরম উত্তেজনার কারণে রাসিক নির্বাচনের ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের ১৪৮টিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর ৮০টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সিটির ১৫টি ওয়ার্ডে এই ৮০টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলো হলো ১, ৩, ৭, ৯, ১৪, ১৫, ১৬, ১৯, ২১, ২২, ২৩, ২৬, ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ড।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মো. রফিকুল আলম বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ও পরের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য রাজশাহী মহানগর পুলিশ সাইবার প্যাট্রলিংসহ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও বিজিবির টহল টিম মাঠে কাজ করছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *