ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হচ্ছে কাহারোল উপজেলা

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলা আগামী বুধবার ১২০টি ভূমিহীন ও গৃহহীর পরিবারের মধ্যে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করলেই ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হবে।
“দেশের একটি পরিবারও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না” মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করেছে কাহারোল উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা। এরই ধারাবাহিকতায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৪র্থ ধাপে কাহারোল উপজেলায় ১২০টি ও পূর্বে দেওয়াসহ ৩৪৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পাকা ঘর এবং দুই শতাংশ জমির মূল দলিল বুঝিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে আসছে ২২মার্চ বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে কাহারোল উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

কাহারোল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ রোকন্জ্জুামান বলেন,১২০টি পরিবারের স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ নামে দলিল সর্ম্পণ করা হয়েছে।প্রত্যেকটি ঘরে ব্যয় হয়েছে ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ৫শত টাকা।
আর এত করেই অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীনরা পেতে যাচ্ছেন তাদের স্বপ্নের ঠিকানা। সরকার প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের জীবন মানের এই পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে কাহারোল উপজেলায়।
ইতিপূর্বে বঙ্গকন্যার দেওয়া উপজেলার রামচন্দ্রপুর,তারগাঁও,সুন্দরপুর,মুকুন্দপুর,রসুলপুর ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়,সময়ের সাথে এখন বদলেছে ছিন্নমুল মানুষের যাপিত জীবন। পল্লী কবির কবিতায় আসমানীরা এখন ভেন্না পাতার ছাউনি থেকে বসবাস করছে রঙ্গিন টিন আর পাকা দেওয়ালের আধাপাকা বাড়িতে। সেই বাড়িতে করছে শাক-সবজির আবাদ। কেউবা করছে হাঁস-মুরগি,ছাগল ও গরু লালন পালন। তাদের কোমল মতি সন্তানদের পাঠাচ্ছে স্কুলে। বসতির দুশ্চিন্তা ছেড়ে নিশ্চিন্ত মনে কাজ করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সংসার। সংসারে এসেছে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা। বসবাসের জন্য সরকারের দেওয়া এই সুবিধাটি পেয়ে খুশি আশ্রয়হীন মানুষগুলো।
কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে আগামীকাল বুধবার ১২০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করলেই ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হবে। সেই ১২০ টি পরিবারের মধ্যে রঙ্গিন টিন আর আধা পাকা বাড়ি ও পুরোপুরি প্রস্তুত। এখন শুধু অপেক্ষা হস্তান্তরের। সেই মহেন্দ্রেক্ষণের অপেক্ষায় রয়েছে ১২০টি পরিবারসহ পুরো কাহারোলবাসী।

বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন,হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে উপজেলার হতদরিদ্র যাদের বসবাসের কোনো ঠিকানা ছিল না তাদের স্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে।

কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাইম হাসান খান বলেন,নতুন কোনো চাহিদা না থাকায় আমরা টাস্কফোর্স কমিটি এবং যৌথ কমিটির সভা সিদ্ধান্ত মোতাবেক কাহারোল উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত করার প্রস্তাব প্রেরণ করেছি। পরবর্তীতে প্রাকৃতিক কোনো কারণ বা অন্য যেকোনো উপায়ে কেউ নতুন ভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীন হলে কতৃপক্ষের নিদের্শনা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ হবে।উপজেলা নিবাহী অফিসার আরো জানান, ৩ দফায় সব মিলেয়ে ৩৪৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ভূমি ও গৃহ প্রদান করা হয়েছিল। চতুর্থ দফায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জমি ক্রয় করে আরও ১২০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে হস্তান্তর করতে যাচ্ছেন। বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফান্সেসের মাধ্যমে ২ শতাংশ করে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তরের মাধ্যমে এই উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত উপজেলা ঘোষণা করবেন।

দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি,কাহারোল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নব-নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন করেন।এই সময় তিনি জানান,বাংলাদেশকে একসময় একটা তলা বিহীন ঝুড়ির দেশ,ক্ষুধার দেশ ও বন্যার দেশ বলা হতো। সেই দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে আজ প্রধানমন্ত্রী ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা করতে যাচ্ছেন।

এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমি সংসদ সদস্য হিসেবে নয়,একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে বলতে চাই,আমরা অত্যন্ত গর্বিত,অত্যন্ত আনন্দিত,আমাদের যে উপলদ্ধি,যে আনন্দ,সে আনন্দ সকল আনন্দকে ছাপিয়ে আজকে আমরা উপভোগ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *