মায়ের কষ্টে মিলেছে মেয়ের সাফল্য

দারিদ্র্যতা বাধা হয়নি সেতারা আক্তার সেতুর। অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাকে এনে দিয়েছে সাফল্য। ছোটবেলায় বাবাকে হারানো সেতুর একমাত্র অবলম্বন মা। মায়ের কষ্টার্জিত অর্থ আর উৎসাহে চলে তার পড়াশোনা। অবশেষে মিলেছে সাফল্য, এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় সে।

জানা গেছে, সেতারা আক্তার সেতু পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের হাড়িভাসা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের মেয়ে। চলতি বছরে হাড়িভাসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় সে।

সেতুর বয়স যখন ৪ বছর তখন মারা যান বাবা আব্দুস সাত্তার। এরপর ৪ ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে জীবন যুদ্ধে নামেন মা কামরুন নাহার। ছেলেদের পড়ালেখা করাতে না পারলেও মেয়েকে নিয়ে তার স্বপ্ন সীমাহীন। সেতুরও স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার।

কামরুন নাহার জানান, তিনি ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে ৪০ দিনের কর্মসূচির রাস্তা সংস্কারের কাজ করেন। তার ৪ ছেলের মধ্যে দুই ছেলে হোটেল শ্রমিকের কাজ করে। এরমধ্যে একজন বিয়ে করে আলাদা থাকেন।

তিনি বলেন, খুব কষ্ট করে সন্তানদের বড় করেছি। অভাবের কারণে ছেলেদের পড়ালেখা করাতে পারিনি। মেয়েটার মেধা ভালো, সে পড়তে চায়। আমিও চাই আমার মেয়ে ভালো কিছু করুক।

সেতারা আক্তার সেতুর বড় ভাই কামরুল ইসলাম বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর আমরা কাজ করতে শুরু করি, পড়ালেখায় এগোতে পারিনি। কিন্তু একমাত্র বোনকে সবসময় উৎসাহ দিয়েছি। সে আজকে ভালো রেজাল্ট করেছে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের।

সেতারা আক্তার সেতু বলে, আমার সাফল্যের পেছনে মা এবং ভাইদের অবদান সবচেয়ে বেশি। তারা আমাকে সবসময় ভালোটাই দিয়েছেন। পাশাপাশি স্কুলের স্যারদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চাই। এজন্য সবার দোয়া চাই।

হাড়িভাসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, এ বছর আমাদের স্কুল থেকে দুইজন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এরমধ্যে সেতারা আক্তার সেতু একজন। সে দরিদ্র পরিবার থেকে ওঠে আসা এবং ক্লাসে বরাবরই ভালো ছিলো। আমি বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তার কল্যাণ কামনা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *