রংপুরে টিসিবির পণ্য বিতরণে ডিলারের লুকোচুরি

সুলভ মূল্যের ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রি নিয়ে রংপুরের মিঠাপুকুরে চলছে লুকোচুরি খেলা। বিক্রির আগে মাইকিং বা কোনো ধরনের প্রচার এবং নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। ফলে অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে বেশিরভাগ পণ্য। পরে সেগুলো ডিলাররা কালোবাজারে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, টিসিবির পণ্য বিক্রি করতে ১৭ ইউনিয়নে ১৫ জন ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ৪১ হাজার ৩৮১ জন কার্ডধারীর কাছে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণে ছোলা, সয়াবিন তেল, চিনি ও মসুর ডাল সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করবেন ডিলাররা। আগে থেকেই বিক্রির স্থান ও তারিখ মাইকিং করে প্রচার করার দায়িত্ব তাদের। কিন্তু ডিলাররা তা না করে হঠাৎ করে পণ্য বিক্রি করায় সময় ও স্থান জানতে পারছেন না কার্ডধারীরা।

উপজেলার ৩ নম্বর পায়রাবন্দ ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য নির্দিষ্ট স্থান বৈরাগীগঞ্জ বাজারে বিতরণ না করে এক ডিলারের বিরুদ্ধে নিজের বাড়ির গোডাউনে রেখে বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, পায়রাবন্দের শাপলা ভ‍্যারাইটিজ ডিলারের মালিক শাপলা নিজের বাড়িতে গোডাউন খুলে টিসিবির পণ্য বিতরণ করছেন। অথচ এ পণ্যগুলো নির্দিষ্ট স্থান বৈরাগীগঞ্জ বাজারে বিতরণের নির্দেশনা দেয়া আছে। ফলে ভোক্তারা অনেক টাকা খরচ করে ইউনিয়ন পরিষদ পার হয়ে ডিলারের বাড়ি গিয়েও পণ্য না পাওয়ার অভিযোগ করেছে।

পায়রাবন্দ ইউনিয়নের জয়রামপুর গ্রামের কার্ডধারী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘এতদূর এসে ৪-৫ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য পাইনি। অথচ নির্দিষ্ট স্থানে বিক্রি করলে হয়তো এত কষ্ট পেত হতো না। একই পরিবারের আট-দশজন মিলে কার্ড দিয়ে পণ্য নিচ্ছে আর আমরা একটি কার্ড দিয়ে পণ্য পাই না।’

টিসিবির পণ্য নিজের বাড়ির গোডাউনে রেখে বিতরণের কথা স্বীকার করে শাপলা এন্টারপ্রাইজের ডিলার শাপলা বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ও বৈরগীগঞ্জ বাজারে জায়গা না থাকায় আমার বাড়ির পাশের গোডাউনে রেখে এসব পণ্য বিতরণ করছি।’

‘এ বিষয় চেয়ারম্যানকে নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলতে আসবেন।’ এই কথা বলে তিনি রাগ দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।

পায়রাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবার রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি মোবাইলে বলেন, ‘ওই ডিলার কারও কোনো কথা শুনেন না। তিনি কোনো মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে মূল্যায়ন করে না। নিজের খেয়াল-খুশি মতো টিসিবির পণ্য বিতরণ করে। বেশি কিছু বললে অন্য ইউনিয়নে এসব পণ্য বিতরণের হুমকি দেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *