ভুক্তভোগীরা জানায়, সরকারে এ চালের প্রধান ডিলার কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুর রউফ সরকারের স্ত্রী ডিলার মেনেকা মাহবুব। তিনিসহ আরও দুই ডিলার মাসুদা আক্তার সুমি এবং ইকবাল বাহার জেলার গঙ্গাচড়ার কোলকোন্দ ইউনিয়নে নতুন কার্ডধারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে সরকারি মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা নিচ্ছেন। আর ইউপি চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠদের টাকা না দিলে কার্ড জোটে না বলেও অভিযোগ তাদের।
ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, কার্ড প্রতি ৪৫০ টাকায় ৩০ কেজি চাল পাওয়ার কথা থাকলেও ডিলাররা ৬৫০ টাকা নিচ্ছেন।
এ কর্মসূচির আওতায় চাল পেতে নতুন কার্ড বানাতে গেলে ইউপি চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠদের ২০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। যারা টাকা দেন তারা কার্ড পান, আর যারা টাকা দিতে পারেন না তাদের ভাগ্যে জোটে না কার্ড।
কার্ডবঞ্চিত একাধিক বাসিন্দা বলেন, আমরা গরিব মানুষ, আমার টাকা দেয়ার সামর্থ্য না থাকায় কার্ড পাইনি। যারা পাওয়ার যোগ্য তারা পাচ্ছে না, আর যাদের সামর্থ্য আছে তারা পাচ্ছেন এই সুবিধা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডিলার মেনেকা মাহবুবকে ফোন দেয়া হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন তিনি। পরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। আরেক ডিলার ইকবাল বাহারের মোবাইলেও একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ডিলার মাসুদা আক্তার সুমি বলেন, আমি কোন উপকারভোগীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিই নি। চাল দেয়ার আগে সবাইকে ফোন করে বলেছি ৪৫০ টাকা এবং ব্যাগ নিয়ে আসবেন। এসব অভিযোগ মিথ্যা বলেও দাবি করেছেন তিনি।
এদিকে, কার্ড বিতরণের অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রউফ সরকার বলেন, আমার ইউনিয়নে চাল বিতরণে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। কার্ড বিতরণের ক্ষেত্রে রাতের অন্ধকারে কেউ যদি কাউকে দিয়ে থাকে তাহলে আমি বলতেও পারব না, জানতেও পারব না।
তবে এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, অভিযোগের বিষয়টি গঙ্গাচড়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তদন্ত করছেন। তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেলে ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, এসব বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেলে ডিলারদের ডিলারশিপ বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক চলতি বছরের মার্চ, এপ্রিল, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এ পাঁচ মাস কর্মসূচির চাল দেয়া হবে। রংপুর জেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় মোট উপকারভোগী কার্ডধারীর সংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজার।